যেভাবে শহীদ হয়েছেনঃ৫ আগস্ট বিকেলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়ে মিরপুর-২ নম্বর এলাকায় গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জীবনীঃস্বপ্ন ছিল ঘর বাঁধবেন, নিজের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানে নতুন জীবন শুরু করবেন, কিন্তু তার আগেই রক্তাক্ত হলো সেই স্বপ্ন। ৫ আগস্ট ঢাকার রাজপথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন তরুণ প্রকৌশলী সুজন মাহমুদ। একটি সম্ভাবনাময় জীবনের হঠাৎ ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যাওয়া যেন এই সময়ের এক নির্মম বাস্তবতা।
স্বৈরাচার পতনের পর গণমানুষের স্বপ্নময় উদ্দীপনায় যখন রাজপথ মুখর, তখনই ক্ষমতাদর্পী স্বৈরশাসকের ঘাতক বুলেট এক নিষ্পাপ প্রাণের স্বাপ্নিক অভিযাত্রার রাশ টেনে ধরে।
ক’দিন পরই বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল যে যুবকের, কথা ছিল ফুলশয্যার মায়াবী আবহে বিভোর হয়ে নতুন স্বপ্ন বোনার, তার ঠিকানা রচিত হলো কবরের নিকষ আঁধারে।
শহীদ সুজনের গল্প শুধু একজন তরুণের ট্র্যাজেডি নয়, এটি একটি প্রজন্মের লড়াই ও বিসর্জনের মন কেমন করা এক বিষাদগাথা।
২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বিয়ের তারিখ নির্ধারিত ছিল তরুণ প্রকৌশলী সুজন মাহমুদের (৩৪)। কিন্তু তার আগেই, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বিজয় মিছিলে অংশ নিয়ে রাজধানী ঢাকার মিরপুরে পুলিশ ও ছাত্র-জনতার সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন তিনি। ফলে বিয়ের পিঁড়িতে আর বসা হয়নি তার। অনেক স্বপ্ন বুকে নিয়ে অকালেই ঝরে গেল একটি তাজা প্রাণ।
ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি শেষ করে কিছুদিন চাকরি করার পর নিজস্ব ব্যবসা শুরু করেন। থাকতেন মিরপুর-৬ নম্বরে ভাড়া বাসায়। ২০২৪ সালের কোরবানির ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসে মা, ভাই ও বোনের সঙ্গে কাটিয়েছিলেন কিছুদিন। কিন্তু মৃত্যুর আগপর্যন্ত মায়ের সঙ্গে আর দেখা হয়নি।