জীবনীঃসুমনের সহযোগী রুবেল ও সোহরাব জানায়, গত ৭ মাস ধরে শহীদ সুমনসহ ৮ জন একসাথে ঢাকা আশুলিয়া উপজেলার বাইপাইল এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।
তারা সকলেই গার্মেন্টসে কাজ করতেন। ৩ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সুমনসহ তারা সকলেই ওই দিন থেকে ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন।
ঘটনার দিন ৫ আগস্ট সকালে শহীদ সুমনসহ তারা গাজীপুর-ঢাকা মহাসড়কের বাইফেল নামক স্থানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দেন। তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলাকালে হঠাৎ করে রাস্তায় আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। একই সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণ করতে থাকে।
এর মধ্যে আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সুমনের সহযোগী আন্দোলনকারীরা আত্মরক্ষার চেষ্টায় এদিক-ওদিক দৌড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে। পরে তারা সুমনকে তাদের সাথে দেখতে না পেয়ে তার খোঁজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই দিন সকাল সাড়ে ১০ টায় তারা রাস্তার ধারে সুমনের নিথর দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে দেখতে পায়।
সহপাঠীরা সুমনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে কান্নাকাটি করতে থাকে এবং অনেকের কাছে সুমনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চায়। কিন্তু আহত ও মৃত্যুর সংখ্যা খুব বেশি হওয়ায় কেউ কারো দিকে এগিয়ে আসতে পারছিলেন না। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তখনও হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল। ফলে ভয়ে কেউ ঘটনাস্থলে আসতেও সাহস পাচ্ছিল না।
দুপুরের পর পুলিশের ভ্যান এসে সুমনের মৃতদেহ ঘটনাস্থল থেকে আশুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই দিন সন্ধ্যায় মাইক্রোবাসে লাশ নিয়ে লক্ষীপুর গ্রামে বাড়িতে পৌঁছেন ওমর ফারুক। ৬ আগস্ট রাতে এশার নামাজের পর সুমন পাটোয়ারীকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।