হামিদুর রহমান সাদমান

হামিদুর রহমান সাদমান

শিক্ষার্থী

সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

৫ই আগস্ট, ২০২৪

ডেটা যাচাই করা হয়নি
বয়সঃতথ্য অনুপস্থিত
জন্ম তারিখঃতথ্য অনুপস্থিত
জন্মস্থানঃমজুমদার বাড়ি, বিজয়পুর দিঘলগা, কুমিল্লা
যেভাবে শহীদ হয়েছেনঃঢাকায় বংশাল থানার পুলিশের গুলিতে।
জীবনীঃজুলাই-আগস্টের উত্তাল আন্দোলন নাড়া দিয়েছিল সব বয়সি মানুষের হৃদয়ে। আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বিচার গুলির মুখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন শ্রমজীবী, শিশু, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই। তাদের একজন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার দীঘলগাঁও গ্রামের কাজী শারমিন আক্তার। তিনি গত ৫ আগস্ট কান্দিরপাড়ের পূবালী চত্বরে মিছিলে ছিলেন। একপর্যায়ে বিজয়ের সুঘ্রাণ পেতে শুরু করলে আনন্দে উদ্বেলিত হন তিনি। পরক্ষণেই তার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। অপরপ্রান্ত থেকে জানানো হয় তার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়েছেন। মুহূর্তে মুষড়ে পড়েন তিনি, হাউমাউ করে কান্না করতে করতে বাড়ি ফিরে সবাইকে বিষয়টি জানান। শারমিন আক্তার বলেন, হামিদুর রহমান মজুমদার সাদমান ছিল বড় ছেলে। ইন্টার্নি করার জন্য গিয়েছিল ঢাকায়। তার সঙ্গে ছিল আরও চার বন্ধু। ৫ তারিখে তারা সবাই রাজধানীর বংশাল এলাকায় মিছিলে ছিল। হঠাৎ একটি গুলি সাদমানের ডান পাশ দিয়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয় তার বন্ধু রাফি। সে-ই খবরটি বাড়িতে জানায়। শিক্ষার্থী রাফি জানান, ‘আমাদের মিছিলে গুলি চালায় বংশাল থানা পুলিশ। সাদমান শুধু একবার চিৎকার দিয়ে বলল আমার গুলি লেগেছে। দৌড়ে অন্যরা আশপাশে গিয়ে অবস্থান নিল। আমরা কজন সাদমানকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটলাম। রিকশায় ওঠানোর পর তিনবার শুধু আম্মু বলেছিল, এটাই তার শেষ কথা। তখনও শ্বাসপ্রশ্বাস চলছিল। কিন্তু তাকে চিকিৎসা দিল না কেউ। উল্টো বলল, মর্গে নিয়ে রেখে আসেন। কিছুক্ষণ পর চোখের সামনেই তার প্রাণপ্রদীপ নিভে গেল। নিথর দেহ ধরে আমরা কাঁদতে থাকলাম। হাসপাতালের লোকজন লাশটি নিয়ে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করল। কিন্তু আমরা তাদের সঙ্গে লড়াই করে প্রতিহত করলাম।’ সাদমানের মা আরও বলেন, ‘লাশ গুমের চেষ্টার কথা শুনে আমার পরিচিত কয়েকজনকে খবর দিলাম। তারা দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে লাশটি নিয়ে কুমিল্লা রওনা দেয়। এরপর জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে তার দাফন করা হয়। সাদমান খুব ভদ্র ও শান্ত ছেলে ছিল । তাকে সবাই খুব পছন্দ করত । বেশ ধার্মিকও ছিল। সে রুটি খুব পছন্দ করত। তার মৃত্যুর পর আমি রুটি বানানোই বন্ধ করে দিয়েছি। কোথাও রুটি দেখলে বুক ফেটে কান্না আসে।’ কথা বলতে বলতে ‍দুচোখ বেয়ে অঝোরে অশ্রু ঝরছিল শারমিন আক্তারের। তিনি আক্ষেপ করে বললেন, সাদমান মাঝে মাঝে বলত- ‘পড়াশোনা শেষ করে বিদেশ যাব, নইলে দেশেই একটা চাকরি করব। চাকরি পাওয়ার পর আব্বুকে বলব, তোমার আর বিদেশে থাকতে হবে না।’ ছেলেটার সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই সে চিরবিদায় নিয়েছে। রক্তচোষা শেখ হাসিনার খুনি বাহিনী তার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। শহীদের মা হিসেবে কেমন দেশ চান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কী আর বলব, নিজ দেশের নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে ছেলের মৃত্যুর কথা মনে হলেই প্রচণ্ড মাথাব্যথা হয়, আমি সহ্য করতে পারি না । যদি অন্য দেশের সঙ্গে যুদ্ধে সাদমান মারা যেত তাহলে মনকে বোঝাতে পারতাম। আমি এমন একটা দেশ চাই, যেখানে আর কোনো মায়ের বুক খালি হবে না।
সর্বশেষ পরিবর্তন:
হামিদুর রহমান সাদমান এর তথ্যে কোনো অসঙ্গতি পেয়েছেন?
অথবা আরো তথ্য যুক্ত করতে চান?হামিদুর রহমান সাদমান এর তথ্য দিন