জীবনীঃআবদুল আউয়াল, বয়স ছিল ৫৭ বছর। রাজমিস্ত্রীর কাজ করলেও দেশের সব খোঁজ খবর রাখতেন। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরের মোচাগারা গ্রামে। তার বাবা মৃত মোহর আলী। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ঢাকার কুতুবখালীতে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় চারিদিকে লাশের মিছিল আর আহতদের আর্তনাদ দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারেননি। দেশের পরিস্থিতির কারণে মধ্য জুলাইয়ে হাতে তেমন কাজও ছিলো না। তাই বিবেকের তাড়নায় ১৫ জুলাই থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ি, কাজলা ও কুতুবখালী এলাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দিতেন। প্রাণহানির শঙ্কায় স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫২) বাধা দিলেও তিনি শোনেননি। লুকিয়ে লুকিয়ে আন্দোলনে যোগ দিতেন।
সর্বশেষ গত ১৯ জুলাই দুপুরে খাবারের পর স্ত্রীর অগোচরে কুতুবখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মিছিলে যোগ দেন। স্ত্রী ফাতেমা বেগম জানান, সেদিন দুপুরে বিকাল ৩টায় খবর আসে পুলিশের এলাপাথাড়ি গুলিতে তার স্বামী আউয়াল মিয়াসহ ৬ থেকে ৭ জন গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন আউয়াল মিয়া গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছেন। তখন স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে খিলগাঁওয়ের মুগদা মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখানে ২১ জুলাই বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
আউয়ালের মরদেহ সেখান থেকে রাতেই অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তার মরদেহ এলাকায় পৌঁছাতেই এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। তাকে এক নজর দেখার জন্য আশাপাশের এলাকা থেকে কয়েক হাজার মানুষ ভিড় করে। জানাজায় প্রশাসনের কেউ ছিলো না। তবে স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
সম্প্রতি আউয়ালের গ্রামের বাড়ি মোচাগারায় গিয়ে দেখা যায় পরিবারের দৈন্য দশা। দোচালা একটি ঘরে কোনোমতে থাকেন স্ত্রী ফাতেমা বেগম ও তার ছেলে হাবিবুর রহমান (১৭)।
সর্বশেষ পরিবর্তন:
আবদুল আউয়াল এর তথ্যে কোনো অসঙ্গতি পেয়েছেন? অথবা আরো তথ্য যুক্ত করতে চান?আবদুল আউয়াল এর তথ্য দিন