জীবনীঃমো. ফারুক (৫০)। গ্রামের বাড়ি জামালপুরের ডেঙ্গুয়ারজর নয়াপাড়া গ্রামে। বাবা মৃত হায়দার আলী এবং মা মৃত ফাতেমা বেগম। স্ত্রী সন্ধ্যা খাতুন আর ছেলে মাহফুজ (১২) এবং মেয়ে তাবাসসুমকে (৭) নিয়ে ছিল ছোট সংসার। উপার্জনের আশায় মো. ফারুক স্ত্রী আর সন্তানদের গ্রামের বাড়ি রেখে বছর দুয়েক আগে সাভারে আত্মীয়ের (বিয়াই) কাছে আসেন চাকুরির খোঁজে। সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভাড়া থেকে একই এলাকায় আত্মীয় জনি মিয়ার মালিকানাধীন রাজ্জাক কাঁচাবাজারে মুরগির দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করেন মো. ফারুক। কর্মস্থলের পাশে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে একাই থাকতেন তিনি। কাজ করে যা আয় হতো তা দিয়ে ভালোই চলছিল সংসার।
মো. ফারুক চার ভাই আর পাঁচ বোনের মধ্যে সবার বড়। ফরহাদ মিয়া, মুরাদ মিয়া, এবং মনোয়ার হোসেন নামের আরও তিন ভাই এবং হাফেজা বেগম, নাজমা আক্তার, মর্জিনা, হোসনে আরা এবং হাসিনা নামের আরও পাঁচ বোন রয়েছে তাঁর। মো. ফারুকের দাদা মৃত শুকুর শেখ এবং দাদি মৃত ইয়ারন বিবি। তার নানার নাম মৃত জসীম উদ্দিন এবং নানীর নাম মৃত জায়দা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালে ২০ জুলাই অন্যান্য দিনের মতোই মুরগির দোকানে বেচাকেনা করছিলেন মো. ফারুক। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুপুরের পরপর হঠাৎ একদল পুলিশ সদস্য এসে কাঁচাবাজারের মধ্যে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। এ সময় দোকান কর্মচারী মো. ফারুক মিয়া, তার আত্মীয় জনিসহ ৫ থেকে ৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়। এদের মধ্যে মো. ফারুকসহ আরও দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ২১ জুলাই রাতে মৃত্যুর কাছে হার মানেন ফারুক। পরে তার আত্মীয় জনি মিয়াসহ অন্যরা এসে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মো. ফারুকের মৃতদেহ তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরের ডেঙ্গুয়ারজর নয়াপাড়া গ্রামে পাঠিয়ে দেয়। সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।
শহিদ মো. ফারুকের বিয়াই মো. জনি বাসসকে মুঠোফোনে বলেন, "দুই বছর হলো আমার আত্মীয় (বিয়াই) মো. ফারুক গ্রামের বাড়ি থেকে সাভারে আসেন। তখন তাকে আমি আমার মুরগির দোকানে কাজে লাগিয়ে দেই। বেশ ভালোই কাজ করছিল ফারুক। অনেক ভালো মনের মানুষ ছিল সে। কখনো কারও সাথে কিছু নিয়ে বিবাদে জড়ায়নি। অত্যন্ত বিনয়ী ফারুকের আশেপাশের সবার সাথেই ছিল সদ্ভাব। ২০ তারিখ দোকানে থাকা অবস্থায় পুলিশ এসে আমাদের বাজারে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে।
এ সময় ফারুক, আমিসহ আরও বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হই। এদের মধ্যে ফারুক আর কোরবান শেখের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। পরে তাদের উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জুলাই রাতে মারা যায় ফারুক।"
সর্বশেষ পরিবর্তন:
মো. ফারুক এর তথ্যে কোনো অসঙ্গতি পেয়েছেন? অথবা আরো তথ্য যুক্ত করতে চান?মো. ফারুক এর তথ্য দিন