যেভাবে শহীদ হয়েছেনঃনারকীয় গণহত্যার সম্পূর্ণ এই ভিডিও সিফাত তার মোবাইলে ধারণ করে। নিচে থাকা ঘাতক পুলিশ তাদের নারকীয় গুলিবর্ষণের দৃশ্যধারণ করা দেখে ফেলে। তারা সিফাত ও তার বন্ধু সিয়ামকে লক্ষ্য করে নিচ থেকেই গুলি করতে শুরু করে। ঘাতকের একটি বুলেট এসে সিফাতের মাথা ভেদ করে অপর পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। অন্য আরেকটি বুলেট এসে সিফাতের বন্ধু সিয়ামের চোখের মণি ভেদ করে মাথার মধ্যে ঢুকে যায়।
গুলি লাগর পর সিফাত ‘আব্বু’ বলে শেষ চিৎকার দিয়ে মুহূর্তেই লুটিয়ে পড়ে ফ্লোরে। অপর রুম থেকে ওর বাবা এসে দেখেন, সন্তানের নিথর দেহ পড়ে আছে। পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে সিফাতের মগজ। মাথা গড়িয়ে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছিল সিফাতের শরীরের তাজা রক্তে।
জীবনীঃএইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছিলেন সিফাত। পরিবারের অর্থনৈতিক অভাবের কারণে আর বেশিদূর পড়তে পারেনি তিনি। ভবিষ্যতে চাকরি করার কোনো ইচ্ছা বা পরিকল্পনা ছিল না তাঁর। কিন্তু তবুও শহিদ আবু সাঈদের রক্তের ঋণ শোধ করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সিফাত ঝাঁপিয়ে পড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি কোটা সংস্কারের পক্ষে, রাষ্ট্র সংস্কারের পক্ষে।
সেদিন ছিল ২০ জুলাই। ঘড়ির কাঁটায় সময় তখন দুপুর ১টা। কারফিউ চলাকালীন মিরপুর-১০ নম্বরের ২৫২ নম্বর মেট্রোরেলের পিলারের পাশে নির্মাণাধীন একটি ভবনের চতুর্থ তলায় অবস্থান করছিলেন সিফাত। সাথে ছিলেন তার অপর এক বন্ধু সিয়াম ও সিফাতের বাবা কামাল হাওলাদার। চতুর্থ তলা থেকে নিচে সিফাত দেখতে পায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটা মিছিল বের হয়। সাঁজোয়া যানে ওঁতপেতে থাকা ঘাতক পুলিশ সেই শিক্ষার্থীদের মিছিলে পাকহানাদার বাহিনীর মতো অতর্কিত গুলিবর্ষণ শুরু করে।
শহিদ সিফাতের বাবা কামাল হাওলাদার বলেন, টাকার অভাবে আমি ওকে লেখাপড়া করাতে পারি নাই।
সিফাতের স্বপ্ন ছিল অনেক বড়। সেই স্বপ্নকে কাঁধে ভর করেই পাড়ি জমায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব।
সিফাত সেই দেশে তিন বছর থেকে দেশে ফিরে আসে। পরে ঠিক করে ইউরোপের দেশ ইতালি যাবে। ইউরোপ পাড়ি দেওয়ার সব প্রক্রিয়াই শেষ হয়েছিল। ভিসাও পেয়েছিল সে। ২৫ জুলাই ইতালি যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু তা আর হলো না।
সর্বশেষ পরিবর্তন:
সিফাত এর তথ্যে কোনো অসঙ্গতি পেয়েছেন? অথবা আরো তথ্য যুক্ত করতে চান?সিফাত এর তথ্য দিন