নাদিম মিজান

নাদিম মিজান

শিক্ষক

কোচিং সেন্টার

১৯ই জুলাই, ২০২৪

ডেটা যাচাই করা হয়েছে
বয়সঃ৩৫
জন্ম তারিখঃতথ্য অনুপস্থিত
জন্মস্থানঃমিরপুর, ঢাকা
যেভাবে শহীদ হয়েছেনঃশুক্রবার মসজিদে নামাজের পর বাড্ডা থেকে বাসায় আসার পথে গুলিতে শহীদ হয়েছেন।
জীবনীঃবৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই, শুক্রবার, জুমার নামাজ পড়তে বাসা থেকে বেরিয়ে রাজধানীর বনশ্রীতে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন নাদিম মিজান। কথা ছিল, নামাজ শেষে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দুপুরের খাবার খাবেন। নামাজ পড়তে বেরিয়ে যাওয়ার পর তার স্ত্রী তাবাসসুম আক্তার নেহা এবং তাদের ছেলেরা তার বাবার বাড়িতে গিয়েছিলেন। কারণ সেদিন তাদের বাসায় গ্যাস ছিল না। তাই আগে থেকেই নেহা ঠিক করেছিলেন দুপুরে বাবার বাসায় গিয়ে খাবেন। নামাজ শেষে নাদিমেরও সেখানে যাওয়ার কথা ছিল। নেহা, তার বাবা-মা, ভাই এবং অন্যরা একসঙ্গে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য নাদিমের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। নামাজের সময় শেষ হওয়ার পরও তিনি না আসায়, তারা সবাই খেয়ে নেন, তবে নাদিমের জন্য খাবার ঢেকে রাখা হয়। শহীদ নাদিম মিজানের স্ত্রী তাবাসসুম আক্তার নেহা বলেন, ‘আমাদের ভাড়া বাসা থেকে বাবার বাসা খুব বেশি দূরে নয়। তাই আমাদের বাসায় গ্যাস না থাকায় সকালে আম্মুকে ফোন করে বলেছিলাম, দুপুরে আমরা তোমাদের বাসায় খাব। নাদিম যখন নামাজ পড়তে বের হচ্ছিল, তখন বললাম, তুমি নামাজ পড়ে ওই বাসায় চলে আসো, আমি ছেলেদের নিয়ে আগেই চলে যাই।’ নাদিম নামাজ পড়তে বের হলে আমরাও বাবার বাসায় চলে যাই। ওর ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে সবাই খেয়ে নিই, আর আম্মা ওর জন্য খাবার ঢেকে রাখেন। তিনি বলেন, ‘অনেকক্ষণ হয়ে গেলেও নাদিম ফিরে এল না। এর মধ্যে আমাদের বাসার কাছের গলিতে বিশৃঙ্খলা ও গুলির শব্দ শুনতে পাই। তখন বাইরে গিয়ে দেখি, আমার স্বামীর পেটে গুলি লেগেছে, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে! আমরা তাকে তাৎক্ষণিকভাবে কাছের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই, যেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’ রাজধানীর মিরপুরের শাহ আলী থানার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জি ব্লকের বাসায় রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসস-এর প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নাদিম মিজানের স্ত্রী তাবাসসুম আক্তার নেহা (২৩) এসব কথা জানান। নাদিমের স্ত্রী নেহা বলেন, ‘আমি প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে শুনেছি, মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসার পর আমার স্বামী গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশ বা বিজিবি এই গুলি চালিয়েছে। পরে ১৯ জুলাই রাতে আমার স্বামীকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়।’ নেহা বলেন, ‘তিন ভাইয়ের মধ্যে আমার স্বামী ছিলেন সবার বড়। আমরা আগে মিরপুরে থাকতাম। আমার শাশুড়ি ২০২৩ সালের ডিসেম্বর এবং শ্বশুর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে মারা যান। এরপর আমরা বনশ্রীতে চলে যাই, আর আমার স্বামী গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসার আয় দিয়ে আমাদের সংসার ভালোভাবেই চলছিল।’ পরিবারের সদস্যরা জানান, ৩৫ বছর বয়সী নাদিম মিজান তার দুই ছেলে আনাস (৩) ও আহনাফ (২)কে বাসা থেকে বের হওয়ার আগে প্রায়ই চুমু খেতেন। ১৯ জুলাই শুক্রবার দুপুরেও ছেলেদের চুমু খেয়ে তিনি নামাজ পড়তে বের হন। রাজধানীর বনশ্রীতে তার বাসা থেকে রামপুরা থানা সংলগ্ন নিকটবর্তী একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়ার জন্য বেরিয়েছিলেন তিনি।
সর্বশেষ পরিবর্তন:
নাদিম মিজান এর তথ্যে কোনো অসঙ্গতি পেয়েছেন?
অথবা আরো তথ্য যুক্ত করতে চান?নাদিম মিজান এর তথ্য দিন